চকরিয়া থানা হাজতে যুবক দুর্জয় চৌধুরীর (২৭) মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে। থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমসহ ৯ জনকে আসামী করে ফৌজদারি মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে জেলা দায়রা ও জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। রবিবার ১৪ সেপ্টেম্বর বিকালে শুনানি শেষে এই নির্দেশ দেন জেলা দায়রা ও জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ মো.মামুনুর রশিদ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার আইনজীবি অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র দাশ। অভিযুক্তরা হলেন- চকরিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শফিকুল ইসলাম, পুলিশের এএসআই হানিফ মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল, মহিউদ্দিন, পুলিশ কনস্টেবল ইসরাক হোসেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানম ও সহকারি শিক্ষক মো.জসীম উদ্দিন, সহকারি শিক্ষক মোস্তফা কামালা, অফিস সহায়ক মো.পারভেজ, নৈশ প্রহরী নুর মোহাম্মদ সহ অজ্ঞাত ৫জন। মামলার আইনজীবি বলেন, গত ২২ আগষ্ট চকরিয়া থানা হেফাজত থেকে দুর্জয় চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন সহকারি কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুপাযন দেব। পরে ২৬ আগষ্ট চকরিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম ও চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমসহ ৯ জনকে আসামী করে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন নিহত দুর্জয় চৌধুরীর বাবা কমল চৌধুরী। কিন্তু এজাহারটি মামলা হিসেবে রুজু করেনি থানা। তিনি আরও বরেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর জেলা দায়রা ও জজ আদালতে মামলার বাদি কমল চৌধুরী ২০১৩ সালের নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১৫ ধারা আইনে একটি ফৌজদারি এজাহার দাযের করেন। পরবর্তীতে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ মো.মামুনুর রশিদ ১৪ সেপ্টেম্বর রবিবার শুনানির দিন ধার্য্য করেন। আদালতের বিচারক বাদি কমল চৌধুরী এবং মামলার আইনজীবিদের বক্তব্য শুনেন। এ প্রেক্ষিতে বিচারক আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানায় সাবেক ওসি শফিকুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে লিখিতভাবে জানানোর জন্য পুলিশ সুপার (এসপি) মো.সাইফউদ্দীন শাহীনকে নির্দেশ দেন। মামলার এজাহারে বাদির বাবা কমল চৌধুরী বলেন, গত ২১ আগষ্ট বিদ্যালয়ের চেক জালিয়াতি ও নগদ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে দুর্জয়কে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। আসলে গত ১০-১২ দিন ধরে এই অভিযোগে তাকে মানসিকভাবে চাপে রাখা হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) আবারও একই অভিযোগে বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটি কক্ষে জিম্মি করে রাখা হয়। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে থানা হাজত খুলে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার আলাকিত চকরিয়াকে জানান, মামলার বিষয়ে নির্দেশনা আসলে, অবশ্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
